বিশ্বব্যাপী প্রযুক্তি বাজার গবেষণা সংস্থা কাউন্টারপয়েন্টের মতে, ২০২২ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে, শাওমি, একটি চীনা মোবাইল ফোন প্রস্তুতকারক বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি বাজারের অংশীদার ছিল। এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত ২৮.৮% মার্কেট শেয়ার নিয়ে, শাওমি এই শিল্পের নেতৃত্ব দিয়েছে। ভিভো ১০.১ শতাংশ শেয়ার নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে, যেখানে স্যামসাং ১৭.৩ শতাংশ মার্কেট শেয়ার নিয়ে রানার আপ অবস্থান দাবি করেছে। কাউন্টারপয়েন্টের সিনিয়র বিশ্লেষক কর্ণ চৌহানের মতে, শাওমি-এর অফলাইন উপস্থিতি, উন্নত স্থানীয় উৎপাদন সুবিধা এবং বিস্তৃত এন্ট্রি-লেভেল পোর্টফোলিও, যেমন বড় ডিসপ্লে আকার, বিশাল ব্যাটারি ক্ষমতা এবং উন্নত ক্যামেরার মতো বৈশিষ্ট্যগুলি এটিকে শীর্ষস্থানে উঠতে সাহায্য করেছে।
স্যামসাং, অ্যাপলকে পেছনে ফেলে বিশ্বে প্রথমবারের মতো শীর্ষ স্মার্টফোন ব্র্যান্ড হয়েছে শাওমি।
চীনা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানটি চলতি বছরের জুন মাসের হিসাবে এই সফলতা পেয়েছে। মূলত বিশ্ব বাজারে জুন মাসে স্মার্টফোন সরবরাহের হিসাবে এই অবস্থান দখল করেছে শাওমি। বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান কাউন্টার পয়েন্ট রিসার্চ জানাচ্ছে, শাওমির বিক্রিপ্রতি মাসে ২৬ শতাংশ করে বাড়ছে। সেই হিসেবে ২০২১ সালের জুন মাসে সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল ব্র্যান্ড হয় শাওমি। চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে শাওমি বিশ্ববাজারে অ্যাপলকে পেছনে ফেলে দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে আসে। সেটা স্মার্টফোন বিক্রির হিসাবে। ২০১১ সাল থেকে দ্বিতীয় প্রান্তিক পর্যন্ত শাওমি বিক্রি করেছে ৮০০ মিলিয়ন স্মার্টফোন।
কাউন্টার পয়েন্ট রিসার্চের গবেষণা পরিচালক তরুণ পাঠক বলেন, বাজারে হুয়াওয়ের পড়ে যাওয়া শাওমির জন্য উত্থানের অন্যতম কারণ। শাওমি তখন থেকেই বিশ্ববাজারে ‘আগ্রাসী’ ভূমিকা নিতে থাকে উদ্ভাবন ও নতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে। ফলে অল্প দিনেই হুয়াওয়ের শূন্যস্থান পূরণ করতে পারে শাওমি। তিনি বলেন, ‘হুয়াওয়ে ও অনার ফোন চীন, ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য এবং আফ্রিকায় বড় বাজার তৈরি করেছিল। এসব বাজারের মধ্যে শাওমি চীন, ইউরোপ এবং ভারতীয় বাজার উদ্ধার করে শীর্ষস্থানে উঠে এসেছে। এসব বাজারে স্যামসাং অনেক পিছিয়ে পড়তেও শুরু করেছে। চীনের বাজার এবং বিশ্বে স্যামাসংয়ের ফোন সরবরাহ কমে যাওয়া সম্পর্কে সিনিয়র অ্যানালিস্ট বরুণ মিশ্র বলেন,‘জুনে চীনের বাজার বেড়েছে ১৬ শতাংশ। এর মধ্য সবচেয়ে বেশি বর্ধনশীল ব্র্যান্ড হয়েছে শাওমি। অফলাইনে এবং অপেক্ষাকৃত নিম্ন-আয়ের শহরগুলোতেও শাওমি ভালো করেছে। এসব বাজারে রেডমি ৯, রেডমি নোট ৯ এবং রেডমি কে সিরিজ দিয়ে এগিয়ে গেছে। একই সময়ে ভিয়েতনামে করোনাভাইরাসের হানায় স্যামসাংয়ের উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। ফলে স্যামসাংয়ের স্মার্টফোন সরবরাহ বিঘ্নিত হয়েছে। খুব অল্প সময়ে শাওমি বড় একটা বাজার কাভার করতে পেরেছে তাদের বড় ধরনের প্রোডাক্ট পোর্টফোলিও দিয়ে। ভিয়েতনামে স্যামসাংয়ের উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় দেশটিতে শাওমির বাজার বেড়েছে ২৬ শতাংশ।
কাউন্টার পয়েন্টের হিসাবে ২০২১ সালের জুন মাসে বিশ্ববাজারে শাওমির দখল করেছে ১৭ দশমিক ১ শতাংশ বাজার। একই সময় স্যামসাংয়ের বাজার ১৫ দশমিক ৭ শতাংশ এবং তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে অ্যাপল, তাদের বাজার শেয়ার ১৪ দশমিক ৩ শতাংশ। অবশ্য চলতি বছর শেষ হতে আরও ছয় মাস বাকি রয়েছে। এভাবে বিশ্ববাজারে ফোন সরবরাহে এগিয়ে থাকলে বছর শেষেও শীর্ষ অবস্থান ধরে রাখতে পারবে চীনা স্মার্টফোন ব্র্যান্ড শাওমি।